নীলমনি পর্ব ৬+৭+৮

0
54

#নীলমনি
#তোয়ামনি
[কপি করা নিষেধ]
নীলমনি (৬-৮)
নিলয় রুমে এসে টয়েল নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়। সাওয়ার শেষ করে রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুছতে থাকে। তখন বিছানার উপর থাকা ফোন টিং করে শব্দ হয়। মনে হয় কেউ টেক্সট করেছে। ও টয়েল বেল্কনিতে মেলে দিয়ে এসে বিছানার উপির হাত পা মেলে শুয়ে পরে৷ ফোন হাতে নিতেই দেখে শত শত ফোন এসে হাজির হয়েছে। কত ম্যাসেজ। তার ইচ্ছে করছে না এই সব দেখতে। তার মধ্যে কয়েকটি এসেমেস তার বাবার। বাবার এসেমেস চেক করতে লাগলো। তখন ঝগরা করে বের হয়েছিলো। সে তার বাবার এসেমেস চেক করতে লাগলো। একটা মেয়ের ছবি পাঠিয়েছে। মেয়েটা শাড়ি পরে বেল্কনিতে দাঁড়িয়ে আছে। নিলয় মেয়েটাকে দেখতে লাগলো। পরপরি শয়তানি হাসি দিয়ে বাবা কে টেক্সট করতে লাগলো।
‘ও আমার প্রিও বাবা। তুমার বন্ধুর মেয়েটি অতিশ রুপবিতি। আমি তার থেকে ও বেশি রুপবতীকে বিয়ে করিছি। এইটা তোমার জন্য সারপ্রাইজ। আর তোমার বন্ধুকে বলে দিও আমি বিয়ে করেছি। সে যেনো তার মেয়েকে অন্য কোথাও বিয়ে দেয়। আর তুমি এই সব পাগলামি বন্ধ করে’।
বিশাল এক টেক্সট করে ফোন ওফ করে চোখ বুঝলো। চোখের তারায় ভেসে উঠে মৌনোতার মুখ পরপরি রিং বেজে উঠলো। নিলয় চোখ মুখ কুচকে ফেলো। সে ছেড়ে দিবে চাকরি। তার আর ভালো লাগে না এতো প্যারা। বউটাকে নিয়ে একটু ভাবছে তা ও হলো না। ভাই এরা কি তার বাসর রাতেই ও এই রকম ঝামেলা করবে। এই সব ভাবেত ভাবতে ফোনটা ধরলো।
‘হুম’
ওপাশ থেকে কেউ বললো
‘মেয়েটিকে নিলামে উঠাতে হবে। মেয়ে মানুষের দাম এমনিতেই বেশি। আর এইটার দাম একটু বেশি ভালো চওরা দামে বিক্রি করা যাবে। সাবধানে সময় মত যেনো গোডাওনে আনা হয়। আর সাবধান কম্পন কিন্তু ইগলের মত। ওর নাকের ডগা দিয়ে নিয়ে যেতে হবে মেয়েটিকে। ও যেনো কিচ্ছু না যানতে পারে। জানলে কিন্তু কেউ বাচবো না’।
কথাটি বলে লোকটা কল রেখে দেয়। নিলয় ফোনটা কান থেকে এনে মুখের সামনে ধরে। বাকা হাসি দিয়ে। অসপষ্ট ভাবে গালি দেয়
‘শু*****য়ো****রে******র*** বা******চ্চা*******।
____________________________________
আরিয়ার মৌনোতাকে ওর রুমে নিয়ে আসে। সে বলে
‘ভাবি তুমি বস। আমি তোমাকে আমার থ্রিপিস দিচ্ছি’।
আরিয়া থ্রিপিছ পরতেই বেশি পছন্দ করে। ওয়েস্টার্ন ড্রেস তার ভালো লাগে না বেশি।
মৌনোতা বিছানায় গিয়ে বসে। হাতের বক্সটা ড্রেসিংটেবিলে রাখে। সে এটা দিয়ে আসতে চেয়েছিল কাকুলির কাছে তবে সে সেটা রাখিনি। বলেছে তোমার জিনিস তুমি সামলে রেখো। সব কিছু তার সপ্ন মনে হচ্ছে। সে কি ভেবে ছিলো আর কি হলো। পরক্ষণেই তার বাবার কথা মনে পরে। সে দীর্ঘ এক শ্বাস ফেলে। সে তো বাবার বিরুদ্ধে যেতে চাইনি। তার বাবাই তাকে এই সবের জন্য বাধ্য করেছে। সে কি ভাবে এক অচেনা ছেলেকে তার জীবন সঙ্গি বানাবে। সে চাই না অচেনা কাউকে বিয়ে করতে। আর সে তো কাউ কে ভালোবাসে। ভালোবাসার কথা মনে পরতেই তার বুক কেপে উঠে। কোথায় আছে ইসরাক। কেনো সে এলো না। সত্যি কে সে ওকে ভালোভাসে না।
‘ভাবি দেখো তোমার কোনটা পছন্দ। কোনটা পরবে’।
আরিয়া চারটা থ্রিপিছ এনে মৌনোতা কে দেখায়। বার বার ভাবি ডাকটা পছন্দ হচ্ছে না মৌনোতার।
‘আমি তো তোমার সমবয়সী আমাকে ভাবি বলতে হবে না। আপু বলো’।
আরিয়া চোখ গোল গোল করে তাকায়।
‘কি আপু? ভাইয়ের বউকে কেউ আপু বলে? ভাবি তুমি কি পাগল হলে’?
মৌনোতা মুচকি হাসে।
‘তো কি হয়েছে’।
‘না না আপু না। তুমি আমার মিষ্টি ভাবি’।
আরিয়া মৌনোতাকে জরিয়ে ধরে।
‘যাও ভাবি চেঞ্জ করে এসো। তার পর দুই জন বাকি রাতটা গল্প করবো। তোমার আর ভাইয়ার লাভস্টরি শোনাবে আমাকে’।
মৌনোতা অবাক চোখে তাকায় আরিয়ার দিকে। আরিয়া ঘাব্রে যায় ওর চাওনি দেখে।
‘ভাবি লজ্জা পাচ্ছো কেনো? ভাইয়া যত গুলা প্রেম করছে সব আমি জানি। শুধু তোমার কথায় আমাদের কখনো বলে নি। তোমাকে যে এত ভালোবাসে সেটা কখনো বলে নি। ভাইয়া এত প্রেম করছে এত প্রেম করছে যা গুনে শেষ করা যাবে না। কিন্তু ও যে তোমাকে এতো ভালোবাসে সেটা জানতাম না। তোমাকে বিয়ে ও করেছে। ভালো হয়েছে। ওর বিয়ে নিয়ে খুম ট্রেনশঅনে ছিলাম আমরা’।
মৌনোতা চোখ সরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আওরায়
‘ভিলেন এক নাম্বারের ভিলেন। এত সুন্দর রুপ দেখে এত গুলা প্রেম করেছে’।
‘কি ভাবছো ভাবি’।
মৌনোতা ভাবনা থেকে বের হয়। মুচকি হেসে বলে
‘না কিছু না। তোমার ভাই এক নাম্বারের ভিলেন জানো’।
‘হুম জানিতো। তাইতো সব মেয়েরা ভাইয়ার প্রেমে দেওয়ানা। আমি তোমাকে ভাইয়ার সব প্রেমের গল্প শুনাবো। তুকি যাও আগে ফ্রেস হয়ে আসো। কিছু খাবে’?
মৌনোতা চোখ সরায়। ভাগিস সে এই ভিলেরনের সত্যি বউ না। তা না হলে কোনো মেয়ে কি সহ্য করতো স্বামীর নামে এই সব অববাদ।
সেই কখন খেয়েছিলো সে। তাই মৌনোতা বলল
‘কি খাবো এত রাতে’?
‘পাস্তা খাবে? আমি অনেক ভালো পাস্তা বানাতে পারি’?
মৌনোতা মাথা নাড়ায়। সে খাবে।
‘আচ্ছা তুমি ফ্রেস হও। আমি পাস্তা আর কফি বানিয়া নিয়ে আসি এক ঝটকায়’।
আরিয় ঘর থেকে বের হয়ে নিচে চলে যায়। মৌনোতা গায়ের গয়না গুলা গুলে বক্সটার পাশে রেখে গোলাপি রঙের একটা থ্রিপিছ নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায় ফ্রেস হতে।
ফ্রেস হয়ে এসে চুল তুয়ালা দিয়ে মুছতে মুছতে ড্রেসিংটেবিলের সামনে দারায়। মুছতে মুছতে খেয়াল করে তার কানের দুলটা ফ্লোরে পরে আছে। ও ভ্রু বাকায়। ও তো সব এখানে ঠিকঠাকই রেখেছিলো। তাহলে এটা নিচে পরলো কি ভাবে।
ও ওটা উঠিয়ে উপরে রাখে। বেল্কনিতে গিয়ে তুয়ালা মেলে দিয়ে আসে। তার পর বিছানায় এসে বসে। সে বক্সটার দিকে দৃষ্টি পাত করে। এটা তাকে কেনো দিলো। সে তো ওই ভিলেনের বউ না। তাহলে সে এটা কেনো নেবে।
**************************************★
ইন্সপেক্টর রাজ্জাকের একমাত্র মেয়ে মৌনোতা। এই পৃথিবীতে এই মেয়ে আর বিধাবা বোন ব্যাতিত আর কেউ নেই তার। তার স্ত্রী মারা গেছে মৌনোতাকে জন্ম দিয়ে। সে মধ্যবিত্ত মানুষ। বোনের মেয়ে হয়েছিলো বলে শশুর বাড়ির লোক তাকে তারিয়ে দিয়েছে। তাই মেয়ে নিয়ে ভাইয়ের বাড়ি থেকে। মিনুর মেয়ে মৌনোতার এক বছরের ছোট। মিনু মৌনোতা আর অনিমাকে নিয়ে থাকতো। মৌনোতাকে কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দেয় নি। মৌনোতা লেখা পড়া করছিল কলেজে। রাজ্জাক সব সময় ভাবতো তার কিছু হয়ে গেলে এই মেয়ের কি হবে। কিন্ত মৌনোতা তার বাবাকে পছন্দ করতো না। কারন সে সময় দিতে পারতো না। ছোট থেকেই মৌনোতা ফুপুর কাছেই বড় হয়েছে। যদি ও মিনু কখনো তাকে মায়ের অভাব বুঝতে দেয় নি তবু ও মৌনোতা মাকে খুজতো বাবা কে খুজতো। বড় হওয়ার পর সে সবার থেকে আলাদা হয়ে কলেজের হোস্টেলে থাকতো। সবার সাথে খারাপ ব্যাবহার করলেও ছোট বোন অনিমাকের সাথে তার ভাব ছিলো। সে শুধু মাঝে মাঝে তার সাথেই কথা বলত। কিন্তু রাজ্জাক তার পুরু জীবন তার মেয়ের জন্য দিয়ে দিয়েছে। মেয়ের সুখেরর জন্য সব কিছু করার চেষ্টা করেছে। তবু ও কখনো মেয়ের ভালবাসা পাইনি। রাজ্জাক চাইতাও তার মেয়ে তার কাছে ফিরে আসুক কিন্তু তা কখনই হতো না। সে মেয়ের এই দূরত্ব মেনে নেতে পারি নি। যদি মেয়ের কিছু হয়ে যায়। যুগ তো তেমন ভাল না। তাই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তার ব্যালকালের বন্ধুর ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছিলো। ছেলেটা ইনেস্পেক্টর । খুব ভালো। ত্রিভুবনে এই রকম ভাল শান্ত বিচক্ষণতা সম্পর্ন ইনেস্পেক্টর আর কেউ নেই। নাম ইনেস্পেক্টর কম্পন। যখন এই কথা মৌনোতা শুনল তখন সে সেটা অস্বীকার করলো। কারন যে বাবা তাকে ভালোবাসে না সে তার কথা কেনো শুনবে। তার বাবা তাকে ওই ছেলের সাথেই বিয়ে দিবে। সে যাকে চিনে না সে কি ভাবে তার সাথে থাকবে। তাই বাবা কে না জানিয়ে তার সাথে পালিয়ে যেতে ব্যাধ হয়েছে। সবার ঊর্ধ্বে ভালোবাসা। এর উপরে সত্য আর কিছুই নেই। তুই চিন্তা করিছ না আমি ভাল থাকবো। তুই ফুপু আর আব্বু কে দেখে রাকিছ। আর নিজেরো খেয়াল রাকিস। ভালো থাকিস বোন আমার।
ইতি
তোর বনু
বোনের চিঠি পরে চোখের পানি মুছে অনিমা। ও পরার জন্য উঠে ছিলো। যখন ঘরের লাইট জালালো তখন দেখে ঘরে কেউ নেই। শুধু টেবিলের উপর চিঠি। চিঠিটি রেখে সারা ঘর খুজে। সত্যি মৌনোতা কোথাও নেই। মৌনোতা বাড়িতে এসেছিলো পশুদিন। আর আজই সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু কোথায় গেছে। ও কান্না করতে থাকে। সত্যি কি তার বোন আর আসবে না।
************************************★
‘ভাবি তুমি ফ্রেস হয়েছো’
আরিয়া ট্রেতে দুই বাটি পাস্তা আর কফি নিয়ে আসে।
বিছানার উপর ট্রে রেখে ও পা ভাজ করে বসে। মৌনোতার হাতে পাস্তার বাটি দেয়। তার পর দুই জন মিলে খাওয়া শুরু করে।
‘ভাবি খেয়ে বলতো কেমন হয়েছে। ভাইয়ার খুব পছন্দ আমার হাতের পাস্তা’।
নিলয়ের কথা শুনে ক্রধে গা জ্বলে মৌনোতার। তবে তা প্রকাশ করে না। সে চুপ চাপ খেতে শুরু করে।
‘বাহ অসাধারন! খুব মজা হয়েছে!
আমাকে বানানো শিখিও’।
আরিয়া খুশি হয়।
‘ঠিক আছে। এখন থেকে তুমি আর আমি মিলে এই রকম মাজরাতে রান্না বান্না শিখবো ঠিক আছে’।
মৌনোতা মাথা নাড়ায়।
সকাল থেকে বিয়ের আয়োজন চলছে। আত্মিয় স্বজন দের দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। কাল গায়ে হলুদ আর পরশু বিয়ে। ডেকরেশনের সব লোকরা সকাল থেকেই আশা শুরু করেছে। বাড়ির বড় নাতির বিয়ে বলে কথা বাচ্চু চৌধুরী কোনো কিছুতেই কমতি রাখবে না। সে আর তার পার্টনার মিলে সব কাজ করছে। তোপাজ্জল বাচ্চু চৌধুরীর ছোটবেলার বন্ধু।তার বাবা মা নেই। সে বাচ্চু চৌধুরীর ব্যাবসায় সাহায্য করে। এই বাড়িতেই থাকে।
নিলয় বেঘরে ঘুমাচ্ছে। কাকুলি চৌধুরী দরজায় এসে ওকে ডাকতে লাগলো।
‘নিলয় বাবা উঠ। আমাদের বের হতে হবে বিয়ের মারকেটের জন্য। নিলয় নিলয়’।
এই ভাবে অনেক্ষন ডাকার পর নিলয় আরমোরা ভাঙতে ভাঙতে উঠে। ঘুম ঘুম চোখে দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে এগারোটা বাজতে চলেছে। সে উঠে দরজা খুলে।
‘বাবা তোকে কখন থেকে ডাকতাছি উঠ তারা তাড়ি। এখন বের হতে হবে। কত শপিং করতে হবে। তারাতাড়ি ফেশ হয়ে নিচে আয়। আমি মৌনোতা কে উঠাচ্ছি’।
কথাটি বলে চলে যায় কাকুলি। নিলয় মাথা নেড়ে ওয়াসরুমে চলে যায়।
মৌনোতা উঠে বেল্কনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো। আরিয়া ঘুমাচ্ছে। ওরা আনুমানিক সকাল পাঁচ টার দিকে শুয়ে ছিলো। মৌনোতার ঘুম ভেঙে গেছে। ওর কিছুই ভালো লাগছে না। ও কি ভাবে এই জাগায় ফেসে গেলো। সত্যি কি ওই ভিলেনটার সাথে ওর বিয়ে হবে। ও মরে গেলেও ওই ভিলেনটা কে বিয়ে করবে না। ও চারিদিকে ভালোভাবে দেখছে। কি ভাবে পালানো যায় এই বাড়ি থেকে।
দরজায় কারো জোরে জোরে আঘাতের শব্দ শুনে আরিয়ার ঘুম ভেঙে যায়। ও জোরে ডাকে ভাবি দেখোতো কে।
আরিয়ার কন্ঠ শুনে মৌনোতা ঘরে আসে। তার পর দরজা খুলে দেখে রোহান আর হিয়া এসেছে। ওরা মৌনোতা কে জরিয়ে ধরে।
‘নতুন ভাবি তোমাকে কখন থেকে ঘোজতাছি সবার রুমেই খুজছি কিন্তু পাই নাই। তার পর বড় আম্মু বললো তুমি আরিয়া আপুর রুমে’।
কথাটি বলে হিয়া।
মৌনোতা মিষ্টি করে হেসে ওদের দুই গালে চুমু দেয়।
‘তাই। আসো বসো। আজ তোমাদের সাথে সারা দিন গল্প করবো ঠিক আছে’।
মৌনোতা ওদের নিয়ে বিছানায় যায়। রোহান বলে
‘নতুন ভাবি আজ তো আমাদের সময় ই নেই। এখন সবাই মিলে বার হবো তোমার আর ভাইয়ার জন্য শপিং করতে’।
মৌনোতার হাসি মিলিয়ে যায়। ও বলে
‘কে বলছেছে’?
হিয়া বলে
‘বড় আম্মু বলছে। আর আম্মু ও রেডি হচ্ছে। একটু পর ই বার হবে সবাই। তুমি এখনো রেডি হও নাই কেন’।
মৌনোতা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। ওকে আজই পালাতে হবে। ওই ভিলেনের সাথে বিয়ে অসম্ভব । তখন ঘরে ঢোকে কাকুলি।
‘বউমা এখনো উঠোনাই। তারাতাড়ি রেডি হও শপিং এ যেতে হবে। ও আরিয়া মা উঠ। আমাদের বেরতে হবে’।
‘আন্টি আমার কিছু কথা ছিলো আপনার সাথে’।
“আন্টি মানে! আমি কি তোমার আন্টি? আরিয়া নিলয় আমাকে আম্মু ডাকে তুমি ও তাই ডাকবে। তুমি ও তো আমার মেয়ে’।
কাকুলি ওর কাছে এসে কপালে চুমু দেয়। মৌনোতা তাকে সব বলতে চেয়েছিলো। কিন্তু আর বলা হয় না। কাকুলি মৌনোতাকে তারাতাড়ি রেডি হয়ে নিচে আসতে বলে। মৌনোতা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। সে মরে যাবে তবু ও ওই ভিলেন টা কে বিয়ে করবে না। ভিলেনের সাথে একবার কথা বলা যাক।
‘তোমার ভাইয়ার রুম টা কোথায়’।
‘নতুন ভাবি ভাইয়া তো আমাদের দুই জনরেই তুমি শুধু তুমি বললা কেন। বলো তোমাদের’। বলে রোহান।
‘আচ্ছা সরি। তোমাদের ভাইয়ার রুমটা কোন দিকে’?
‘হুম এইবার হয়েছে। চলো আমরা নিয়ে যাই’।
নিলয় ফ্রেশ হয়ে ড্রেসিংটেবিলর সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে পরিপাটি করছিলো। তার বিয়ের শপিং বলে কথা। রিমন আর আসিফ কেও বলা যাক। ও ওদের টেক্সট করার জন্য ফোন হাতে নেয় দেখে ফোনে চার্জ নেই। এখনি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই চার্জে বসিয়ে শুধ্য আসিফ কে টেক্সট করে বলে দিলো রিমন কে নিয়ে যেনো শপিংমলে এসে পরে। তার পর আবার ড্রেসিংটেবিলর সামনে দাঁড়িয়। দরজায় ধাক্কানোর শব্দ শুনে সেই দিকে না তাকিয়েই বলল
‘খোলা আছে। ভিতোরে আসো’।
মৌনোতা দরজা খুলে তড়িৎ গতিতে এসে নিলয়ের সামনে দাঁড়ায়। রোহান হিয়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। নিলয় ভ্রু বাকায় তবে ঠোঁটের কোনে শয়তানি হাসি ফোটায়। মৌনোতা নিলয়ের পাঞ্জাবির কলার ধরে পায়ের পাতা একটু উচু করে ওর মুখ বরাবর হয়। ওদের এই কান্ড দেখে রোহান হিয়া দৌড়ে রুম থেকে বার হয়ে যায়।
‘ সমস্যা কি আপনার? কেনো এই সব করছেন’?
নিলয় ডানে বামে মাথা কাত করে তার পর বলে
‘ও মনিমালা, তোমার কি আর দুইটা দিন সহ্য হলো না। এখনি জামাইর এতো কাছে আসতে চাইছো? আমি ছেলে হয়ে নিজেকে কন্ট্রোল আর তুমি মেয়ে হয়ে পারছো না। ভালই হলো বাসর রাতে সময় নষ্ট হবে না’।
মৌনোতার কান রে রে করে উঠে। ও দ্রুত কলার ছেড়ে দূরে ছিটকে যায়।
‘বাজে কথা বলবেন না। আমি আপনাকে মরে গেলো বিয়ে করবো না। আপনার মত ভিলিন কে বিয়ে করার থেকে সারা জীবন অবিবাহিত থাকা ভালো’।
নিলয় ওর কবাট থেকে গান নিয়ে আসে। তার পর ছোট ছোট পা ফেলে মৌনোতার সামনে দাঁড়ায়। শয়তানি হাসি দিয়ে ওর কানের উপর থাকা চুল গুলা গান দিয়ে কানের পিঠে গুজে দিয়ে বলে
‘বিয়েতো তোমাকে করতেই হবে মনিমালা। আমার বউ হতেই হবে তোমাকে’।
‘মেরে ফেলেন তো। ঝামেলা শেষ। আমি আপনার বউ হবো না’।
‘তোমাকে মেরে ফেলে আমি যে বিয়ের এগেই বিধবা হয়ে যাবো। তখন কাকে আদর ভালোবাসা দিবো। আমার এত এত সপ্ন বউ কে নিয়ে সব যে নষ্ট হয়ে যাবে’।
মৌনোতা চোখ বন্ধ করে ফেলে। এই অসভ্য লোকের কথা আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না
‘চুপ এক দম চুপ। আমি আজই পালিয়ে যাবো। আমি কিছুতেই আপনাকে বিয়ে করবো না’।
কথাটি বলে মৌনোতা বাইরে যাওয়ার জন্য উদ্বত হয়। নিলয় পিছনে না ঘুরে ডানে বামে মাথা কাত করে মৌনোতার উদ্দেশ্যে বলে
‘পৃথিবীর যে প্রান্তেই তুমি চলে যাও না কেনো তোমার এই ভিলেন তোমাকে সেই খান থেকেই তুলে নিয়ে আসবে। কথা দিলাম’।
নিলয়ের ব্যাকে কেপে উঠে মৌনোতা। তবু ও কিছু বলে না। চুপ চাপ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
দুপুরে খেয়ে সবাই শপিংর জন্য বেরিয়েছে। নিলয়ের বড় খালা খালাতো বোন অনন্যা খালাতো ভাইয়ের বউ শায়েন্তিকা। দুই মামা মামি। তাদের ছেলে মেয়ে সবাই। তিনটা বড় গাড়ি নিয়ে বার হয়েছে। দুইটা তে বড় রা সবাই। আর একটা তে মৌনোতা, নিলয়, আরিয়া, শায়েন্তিকা, অনন্যা, রোহান, হিয়া, অর্নব, রিংকি, নৌওরিন।
অর্নব ড্রাইভিং করছে। অর্নবের বউ রিংকি। ও ওর মামাতো ভাই। সবাই হাসা হাসি করছে। বিভিন্ন কথা বলছে। মৌনোতা জানালার পাশে বসে গম্ভীর মিখে আকাশ দেখছে। ওর পাশে নিলয় বসেছে। ওর অসস্থি হচ্ছে। তবু ও কিছু বলছে না। এই লোকটাকে কিছু বলা আর না বলা একই। নিলয় ওর কানের কাছে গিয়ে বলে
‘কি ভাবছো মনি মালা’
মৌনোতা কিছু উত্তর দেয় না। শুধু ঠোট বাকায়।
‘ইসসসসসস তোমার এই বাকা ঠোঁট যে কত সুন্দর’।
মৌনোতা হতাশার শ্বাস ফেলে। চোখ ঘুরিয়ে নিলয়ের দিকে তাকায়।
‘আপনি যত চেষ্টাই করেন বিয়ে কিছুতেই হবে না। আপনার মত ভিলেন কে আমি বিয়ে করবো না’।
নিলয় শয়তানি হাসি দেয়। তার পর ফিস ফিস করে বলে
‘তোমাকে আমার বউ ও হতে হবে। আমার আদর ভালোবাসা ও খেতে হবে। পৃথিবী তোলপার করে হলেও আমি তোমাকে আমার করে ছাড়বো। কেউ আটকাতে পারবে না। তোমার এই ভিলেন তোমাকে কতটা ভালোবাসে তুমি নিজে ও জানো না। মনিমালা………’।
‘কি ছোট ভাই বিয়ের আগেই এত কথা আমাদের সাথে ও বলো। আমরা ও একটু শুনি। আর দেখি তর সয় না’।
কথাটি বলে শায়েন্তিকা। তার পর সবাই মিলে হাসে। মৌনোতা লজ্জায় চোখ সরিয়ে ফেলে।
নিলয়দের গাড়ি আগে এসে পৌছায়। ওরা গাড়ি থেকে নামে। নিলয় আরিয়া কে বলে আম্মুকে কল দিতে। অনাদের আসতে আর কতক্ষন লাগবে সেটা জানতে। নিলয় চারিদকে একবার চোখ বুলায়। পুরু শপিং মলটা একবার ডানে বামে মাথা কাত করে জুহুরির চোখে দেখে। শায়েন্তিকা মৌনোতাকে বলে
‘কিরে আমার ভাই টারে কিবে পটাইলি’।
মৌনোতা মনে মনে আওরায় পাগলা কুত্তার কামর খাইয়া পটাইছিয়ালম। কুত্তার কামর না খিলে কেউ এই রকম ছেলের ভাগ্যে জুটে না। রিংকি ওর সিনায় ধাক্কা দিয়ে বলে
‘কিরে লজ্জা পাসিছ কেন। বল আমাদের’।
তার পর হাসে সবাই।
‘আরে বলবে বলবে সব বলবে’।
নিলয় মৌনোতার কাছে এসে ওর হাত চেপে ধরে। নিলয়ের এই কান্ডে কেপে উঠে মৌনোতা। শায়েন্তিকা রিংকি সবাই স্বশব্দে হেসে উঠে।
‘ইসসস কত ভালোবাসা। আমাদের কপালে এমন জামাই জুটছে ভালোবাসা তো দূর একটু রোমান্টিক কথাও বলে না’।
ওর কথায় মৌনোতার লজ্জায় শরীর কান গরম হয়ে উঠে।
অর্নব পেছন থেকে বলে
‘ভালোবাসি না এই কথা বলতে পারল’।
রিংকি ঠোঁট বাকিয়ে বলে
‘হুম বাসইনা তো। দেখবো তো আজ কইটা শাড়ি কিনে দেও’।
‘ও আগে বলবা তো এই কথা। বাদ দেও এত ভালোবাসা কই রাখবা এত ছোট হাইট নিয়ে’।
রিংকি হাইটে অনেক খাটো। তাই অর্নব সব সময় ওকে খোটা দেয়। রিংকি চোখ গরম করে তাকায়।
‘ভাই নিলয় তোরা আই। আমার আজ খবর আছে। আমি যাই’।
অর্নব মলের ভেতরে চলে যায়।
‘ওই দাড়াও বলছি। আজ তোমার এক দিন কি আমার রক দিন। আমি খাট না দাঁড়ও’।
রিংকি ও অর্নবের পেছন পেছন যায়। শায়েন্তিকা অনন্যা কে বলে ননদিনি চলো আমারা যাই। ওরা প্রেম করতে করতে আসুক। ওরা হাসতে হাসতে মলের ভেতরে ঢুকে।
মৌনোতা চোখ গরম করে বলে
‘আপনি সবার সামনে আমার হাত ধরলেন কোন সাহসে। ছাড়ুন বলছি’।
‘ভাইয়া আম্মু রা আস্তে আরো আধা ঘন্টা লাগবে’।
‘আচ্ছা তুই রোহান আর হিয়াকে নিয়ে যা। আমি আর তোর ভাবি একটু প্রেম করবো তার পর আসছি’।
মৌনোতার কান রে রে করে উঠে। ও চোখ বন্ধ করে ফেলে। আরিয়া ঠোটিপে এসে রোহান আর হিয়া কে নিয়ে যায়। নিলয় আবার আরিয়া কে ডাকে ওর ফোন দিয়ে যেতে বলে। আরিয়া ফোন দিয়ে চলে যায়।
‘আপনি কি আমার হাত ছাড়বেন নাকি আমি চিৎকার করবো’।
‘পাগলের প্রলাপ দিও না বউ। তুমি তোমার জামাইয়ের কাছে। জামাই হাত ধরলে কেউ চিৎকার করে। মানুষ তোমাকে পাগল বলবে’।
নিলয় কাউকে একটা টেক্সট করে তার পর ফোন পাঞ্জাবির পেকেটে রাখে। তার পর মৌনোতার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে বলে
‘বেশি কথা বলো না মনিমালা তোমার মাথার খুলি উড়াতে আমার এক সেকেন্ড ও লাগবে না’।
‘মারুন না। আমি তো আপনাকে মেরে ফেলতেই বলছি’।
মৌনোতা চোখ সরিয় নিলয়ের দিক থেকে। নিলয় ওর হাত আরো শক্ত করে ধরে বলে
‘আম্মু রা আসতে আসতে চলো আমরা একটু ঘুরে আসি’।
নিলয় ওর হাত টেনে নিয়ে যেতে থাকে। মৌনোতা রাগে ফোসতে ফোসতে ওর পিছু পিছু হটাতে থাকে। নিলয় একবার পেছন দিকে ঘুরে চোখ দিয়ে কাউকে একটা ইশারা করে।
‘জীবনে নাকি কম প্রেম করেন নাই। তো এত মেয়ে থাকতে আমার পেছনে কেনো পরেলেন’?
‘তোমার দিকে তাকিলে আমি যে মুগ্ধতা উপলব্ধি করি, সেই মুগ্ধতা আর কোনো মেয়ের মাঝেই পাইনি তাই’!
মৌনোতা চোখ ছোট ছোট করে তাকায় নিলয়ের দিকে। তার পর দাতে দাত চেপে বলে
‘এই জন্যই এত গুলা প্রেম করতে পারছেন। এই সব মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন দেখেই মেয়েরা আপনার প্রেমে পরে’।
নিলয় পেছনে না তাকিয়ে বলে
‘তুমি পরবে কবে সেটা বলো। যে দিন তুমি আমার প্রেমে পরবে সেই দিন বুঝবো আমার এই জীবন ধন্য হলো’।
মৌনোতা ঠোঁট বাকিয়ে বলে
‘কোনো দিন ও না। আমি আপনার মত ভিলেনের প্রেমে জীবনে ও পরবো না। অসহ্য একটা লোক’।
নিলয় হতাশ ভঙিতে ওর দিকে তাকিয়ে বলে
‘তোমার জায়াগায় যদি অন্য মেয়ে থাকতো এতোক্ষনে কয় বার যে ডেটে যেতাম তার হিসেব থাকতো না’।
মৌনোতার চোখ মুখ কুচকে যায়।
‘নিলজ্জ ভিলেন’!
নিলয় শয়তানি হাসি দেয়।
সবাই আসার পর আগে শাড়ির দোকানে যায়। কাকুলি শিউলি নিলয়ের মামি তিন্নি খালা ডালিয়া শাড়ি দেখছে। মৌনোতা কে পাশে বসিয়ে রাখছে। তারা এক এক করে শাড়ি দেখছে। বাকিরা অন্য কিছু দেখছে। নিলয় মৌনোতার পাশে বসে রয়েছে। সে মৌনোতা কে চোখে হারাবে না। আরিয়া অনন্যা অন্য পাশে। কাকুলি একটা শাড়ি নিয়ে মৌনোতাকে বলে দেখো মা এইটা কেমন লাগে। তিন্নি বলে বলে ভাবি আগে বেনাসরি দেখি তার পর অন্য কিছু। আচ্ছা তোরা ওই পাশে গিয়ে দেখ। শিউলি তিন্নি ডালিয়া ওঠে অন্য পাশে যায়। কাকুলি অন্য শাড়ি খুজতে ব্যাস্ত। একটা একটা করে দোকানদার শাড়ি এগিয়ে দিচ্ছে মৌনোতার দিকে।
ওর কিছুই ভালো লাগছে না। একবার নিলয়ের দিকে আর চোখে তাকিয়ে ঠোঁট বাকায়। ভালোই হতো বাবার পছন্দ করা ইনেস্পেক্টরের সাথে বিয়ে করলেম। অন্তত এই নিলজ্জ ভিলেনের সামনে পরতে হত না। নিলয় তা পক্ষকরে শয়তানি হাসি দেয়। নিলয় যাকে টেক্সট করেছিলো সেই নাম্বার থেকে কল আসে ও কথা বলার জন্য অন্য দিকে যায়।
মৌনোতা নিলয় কে উঠে যেতে দেখে ভাবে এই সুযোগে ও পালিয়ে যাবে। ও চেয়ে থাকে নিলয়ের যাওয়ার দিকে। নিলয় ওর থেকে একটু দূরে চলে যেতেই ও উঠে দাঁড়ায়। যে ভাবেই হক ওকে পালাতেই হবে। ও ঢোক গিলে আল্লার নাম স্মরণ করে।
“আল্লাহ আমাকে সাহায্য করো। এই ভিলেনের হাত থেকে আমাকে বাচাও।’
একবার কাকুলি চৌধুরীর দিকে তাকায়। সে ব্যাস্ত শাড়ি দেখায়। ও পাশ ফিরে পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুজে। ডান দিকে সুবিধাজনক রাস্তা দেখে। ওর বুক ধুক ধুক করছে নিলয় একবার জানতে পারলে ওকে সত্যি গুলি করবে। করলে করুক তবু ও এই ভিলেন কে ও বিয়ে করবে না।
ও আল্লাহ আল্লাহ করতে করতে এক পা বাড়ায়। আরেক পা বাড়াতে যাবে তখন ই পেছন থেকে কেউ লাল বেনারসি দিয়ে ওর সারা অঙ্গ মুরিয়ে দেয়। ওর বুক ছ্যাত করে উঠে।
পেছন থেকে লোকটি বলে
‘মনিমালা……. এই শাড়িতে তোমাকে একটু খুব সুন্দর লাগবে’।
নিলয়ের কন্ঠ পেয়ে ওর হাত পায়ের জয়েন্ট সব খুলে পরবে এমন অনুভুতি হয়। ওর হ্রদপিন্ড ট্রেনের থেকে ও বেশি জোরে জোরে চলতে থাকে। ওর শ্বাস পাথরের ন্যায় ভারি হতে থাকে। বারে বারে ঢোক গিলতে থাকে। শরীরে কেউ পানি ঢেলে দিয়েছে এমন ভানে ঘামতে থাকে।
নিলয় ডানে বামে মাথা কাত করে তার পর পেছন ঘুরে কাউকে ইশারা করে মোটা কালো লোকটা কে তুলে নিতে। লোকটা আদেশ পাওয়া মাত্র মোটা কালো লোকটাকে তুলে নিয়ে চলে যায়। নিলয় মৌনোতার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে
‘পালানোর কথা মাথায় ও এনো না মনিমালা… প্রথম বার এই রকম সাহস দেখিছো বলে কিছু বললাম না। পরের বার… পাঞ্জাবির পকেটে থেকে গান পের করে উড়ন্ত চুল গুলোকে কানে গুজে দিয়ে বলে
‘মাথার খুলি এক দম উড়িয়ে দিবো। তোমাকে আমার বউ হতেই হবে। আমার ভালোবাসা আদর সোহাগ সব ভোগ করতে হবে’।
নিলয় শাড়ি থেকে মৌনোতা কে আলগা করে। তার পর ওর হাত শক্ত করে ধরে মায়ের কাছে চলে যায়।
মৌনোতার বুক ফেটে কান্না আসতে চায়। এই ভিলেন টা বুঝলো কি ভাবে সে পালাছচে।
‘আম্মু এই শাড়ি টা নিও। মনি কে এই শাটি বেশি সুন্দর লাগবে’।
‘বাহ এটা তো খুব সুন্দর। আচ্ছা ঠিক আছে এইটাই নেবো’।
নিলয় মৌনোতা কে বসিয়ে নিজে ওর পাশে বসে। মৌনোতা ভয়ে কাপছে।
‘আল্লাহ এটা কি করলা। কেনো আমাকে সাহায্য করলে না’।
‘মনি মালা চলো কিছু খেয়ে আসি। আম্মু তুমি শাড়ি দেখো আমারা আসছি’।
‘আ…মি….আমি যাবো না আপনার সাথে। ভিলেন আপনি। ভিলেন’।
কাদো কাদো স্বরে বলে মৌনোতা। নিলয় শয়তানি হাসি দিয়ে বলে
‘আমি তো তোমার ভালোবাসা পেতে চায়ছি। তুমি কেনো আমাকে ভিলেন বানাচ্ছো’।
মৌনোতা আর কিছু বলার সাহস হয় না। ও জানে এই লোকটার থেকে ও কোনো দিন ছাড়া পাবে না। নিলয় ওর কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে
‘এই জীবনে না শুধু আল্লাহ যত বার তোমাকে সৃষ্টি করবে যে রুপের সৃষ্টি করেব আমি ততবার তোমার পিছু নিবো। তোমাকে আমার কাছ থেকে কেউ আলদা করতে পারবে না মনিমালা………। আমি ভালোবাসি তোমাকে’।
চলবে
®তোয়ামনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here