নীলমনি পর্ব ১৭+১৮

0
64

#নীলমনি
#তোয়ামনি
[কপি করা নিষেধ ]
নীলমনি ~১৭+১৮
পড়ন্ত বিকেল। মৌনোতা বেল্কনিতে বসে গুন গুন করে গান গাইছিলো। একটু আগে রোহান আর হিয়া আসেছিলো। ওদের সাথে একটু গল্প করেছে। ওদের মিস আসবে বলে চলে গেছে। করার মত ও কাজ নেই। আরিয়া সেই সকালে বের হয়েছে এখনো আসে নাই।
হঠাৎ পেছন থেকে আরিয়া ডাকে।
‘ভাবি’।
মৌনোতা ঘার ঘুরিয়ে তাকায়।
‘কই ছিলা তুমি। আমার একা একা ভালো লাগছিলো না। তোমার পায়ের অবস্থা কেমন’?
আরিয়া বসতে বসতে বলে
‘হুম আগের থেকে অনেক ভালো। হাটতে একটু সমস্যা হয়। তবে ভালোই লাগছে। চলো বাইরে থেকে ঘুরে আসি’।
‘তুমি হাটতে পারবে’?
‘হুম পারবো তো’।
এমনি তেই মৌনোতার ভালো লাগছে না একা একা বসে থাকতে। বাইরে গেলে ভালোই লাগবে। তাই ও আর কথা না বাড়িয়ে রাজি হয়ে গেলো।
হেলে পরা রোদের আলোতে দুইজন হেটে যাচ্ছে। দুইজনই প্লান করে একই রকম শাড়ি পরে বেরিয়েছে। ওদের বাসার পাশে একটা পার্ক আছে সেই জায়গা দিয়ে হাটা হাটি করে। মৌনোতার শুধু মনে হচ্ছে কেউ ওদের ফলো করছে। বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে। কাকুলি বলেছে বেশি দূরে না যেতে। তাই ওরা পার্ক ঘুরে হাটতে হাটতে কলির মোড়ে এসে দাঁড়ায়। এখান থেকে ওরা ফুসকা খাবে। সন্ধ্যার আজান পরবে। ফুসকা বানানো শেষ হলে মৌনোতা প্রথম প্লেট আরিয়া কে দেয়। তারপর মৌনোতা আরিয়ার মুখোমুখি ঘুরে দাঁড়ায়। একটা ফুসকা মুখের কাছে নিতেই বাহু ধরে কেউ টান দেয়। মৌনোতা কারো বুকের সাথে লেপটে যায়। হাত থেকে ফুসকার প্লেট পরে যায়। পরক্ষণেই একটা গুলির আওয়াজ শোনা যায়। আরিয়া ভয়ে কাপতে থাকে। মৌনোতা গুলির শব্দ শুনে লোকোটার পিঠের শার্ট খামছে ধরে। পরক্ষণেই ও মুখ তুলে তাকায়। নিলয়ের শান্ত মুখশ্রী দেখে সস্থি বোধ করে। মৌনোতা ভয়ে ও কাপতে থাকে। অস্পষ্ট কন্ঠে বলে
‘আপনি’!
নিলয় পেছন ফিরে তাকাতেই গাছের আড়াল থেকে একটা উল্টো হয়ে দৌড়ে পালায়। ও চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে থাকে। তার পর মৌনোতার দিকে শান্ত দৃষ্টি মেলে তাকায়। শান্ত ভাবেই বলে
‘আমার অনুমতি ছাড়া আর বাইরে আসবে না’।
রাত প্রায় অনেকটায়। মৌনোতার ঘুম আসছে না। বিকেলে হওয়া ঘটনা ওর মাথায় ঘুরছে। সব চেয়ে বড় কথা নিলয় জানলো কি ভাবে ও বের হয়েছে। আর কে বা গুলি করতে চেয়ে ছিল।
‘ঘুম কি আসবে না’?
পেছন ফিরে তাকিয়ে মৌনোতা বলে
‘হুম’।
‘তো আসো। এখানে বসে আছো কেনো’?
‘আপনি জানলে কি ভাবে আমি বাসা থেকে বের হয়েছি’?
নিলয় ডানে বামে মাথা কাত করে বলে
‘তুমি কখন কি করছো সব আমার জানা। আর নেক্সট টাইম আমার অনুমতি ছাড়া বাইরে যাবে না। কোথাও না। যত প্রয়োজন হোক। আমাকে বলবে। দরকার হলে আমার সাথে যাবে ওকে’।
মৌনোতা মাথা নাড়ায়। নিলয় আর কথা না বাড়িয়ে বালিশ নিয়ে সোফায় চলে যায়। মৌনোতা রুমে এসে দেখে নিলয় ফোসায় শুয়েছে। মৌনোতার অসুবিধা হবে দেখে নিলয় সোফায় শোয়। কিন্তু ওইটুকু সোফায় এত বড় লোক প্রতিদিন কি শুতে পারে। মৌনোতা প্রতিদিন দেখে কিছু বলে না। ও চাই ভিলেনটা ওর থেকে দূরেই থাকুক। কিন্তু ভিলেনটা ওর খারাপ চাই না। যদি খারাপই চাইতো তাহলে আজ ওর প্রান বাচাতো না। আর আগের বার ও ওর প্রান বাচিয়েছে। আর সোফায় কি ঘুম আসা যাই নাকি।
‘আপনি সোফায় গেলেন কেন? এখানেই তো শুতে পারেন’।
নিলয় ঘার ঘুরিয়ে মৌনোতার দিকে তাকায়।
‘সোফায় কি কারো ঘুম হয়? মাঝ খানে কোলবালিশ দিলেই তো হয়। শুধু শুধু কষ্ট করেছেন কেন? আমার কোনো সমস্যা হবে না’।
‘জামাই এর সাথে শুতে চাও এইটা বলেই তো হয়। এত ঘুররিয়ে পেচিয়ে কথা বলার কি আছে? ঘুরিয়ে পেচেয়ে কথা আমার পছন্দ না’।
নিলয় উঠতে উঠতে বলে।
মৌনোতা ভ্রু বাকায়। দাতে দাত চেপে। তবে কিছু বলে না। যদি আবার শুট করে দেয়। কখন আবার বন্দুক নিয়ে এসে ওর মাথায় ধরে তার ঠিক নেই। এই লোকটা এক নাম্বারের অসভ্য। এক নাম্বারের ভিলেন।
মৌনোতা সকালে উঠে নামাজ আদায় করে। শারীরিক ভাবে অসুস্থ থাকার কারনে এত দিন নামাজ আদায় করতে পারে নি। নামাজ পরে বেল্কনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। সকালের স্নিগ্ধ বাতাস ওর সারা শরীর ছুয়ে দেয়। কি সুন্দর এই সকাল। ও কিছুক্ষন বারান্দায় থেকে তার পর রুমে আসে। রুমে ঢুকতেই দেখে নিলয় উপুর হয়ে ঘুমাচ্ছে। ও সেই দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। ওর কানে ভাসতে থাকে সেই মধুর সুর।
‘আমার হৃদয় একটা আয়না
সেই আয়নার তোমার মুখটি ছাড়া
কিছুই দেখা যায় না’।
ও অজান্তেই মুচকি হাসে। ও ভেবে পায় না কেনো ওকে ভিলেন টা এই ভাবে বন্দি করে রেখেছে। কি চাই। কে হয় ও ওই ভিলেন টার।
বাবা! বাবার কথা মনে হতেই মৌনোতার মনটা মোচর দিয়ে উঠে। ও নিলয়ের দিকে থেকে চোখ সরিয়ে নেয়। সত্যি কি ও এই বাবার মেয়ে ছিলো? বাবা একজন আইনের লোক হয়ে নিজের মেয়েকে খুজে পাচ্ছে না! বাহা ভালোই। সত্যি মা না থাকলে পুরু পৃথিবীটাই অন্ধকার। আজ যদি ওর মা বেচে থাকতো তাহলে ওর জীবনে এত দূঃখ থাকতো না। কোন পাপের জন্য আল্লাহ ওর মাকে আগেই নিয়ে গেলো। একটা ডাক পর্যন্ত দিতে পারলো না। ও ঠিক করে আর ফিরবে না ওই বাবার কাছে। জার কাছে ওর কোনো মূল নেই।
মৌনোতা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। কাকুলি চৌধুরী অনেক ভালো। হয়তো সে ওকে জন্ম দেয় নি তবু ও অনেক ভালো বাসে। ও ভাবতে ভাবতে রুম থেকে বের হয়।
সকালের খাবার রেডি হলে যার যার মত টেবিলে বসে। আজ কাকুলি মৌনোতা দুই জন মিলে সকালের খাবার বানিয়েছে। সেফদের কাউকে দেখা যাইনি আসে পাশে। সাথে বুলবুলি ও সাহায্য করেছে। ঘড়ির কাটা আটটায় গিয়ে পরেছে। বাচ্চু চৌধুরী আর ওনার পার্টনার খেয়ে চলে গেছে। কাকুলি আরিয়ার জন্য খাবার নিতে গেলে মৌনোতা বলে মা আপনি খান আমি নিয়ে যাচ্ছি।
মৌনোতা খাবার নিয়ে আরিয়ার রুমে ঢুকে। আরিয়া ঘুমাছিলো। মৌনোতা ট্রে টেবিলে রেখে জানাল থেকে পর্দা সরায়। পর্দা সরাতেই আলো এসে আরিয়ার মুখ ছুয়ে দেয়। আরিয়া কাথা টেনে মুখে নেয়। মৌনোতা আরিয়া কে ডাকে।
‘আরিয়া ওঠো অনেক সকাল হয়েছে। তুমি আজ কলেজ যাবে না’?
অনেক বার ডাকার পর আরিয়া ঘুম ঘুম চোখে তাকায়। কয়েক বার চোখ কচলে তার পর ভালো ভাবে তাকায়। মৌনোতার মুখ দেখে ছিটে উঠে আরিয়া। মনে হলো ও কিঞ্চিৎ ভয় পেয়ে গেলো। ও উঠে মৌনোতার দুই হাত চেপে ধরে।
‘ভাবি আই এ্যম সরি। কাল যদি আমার সাথে না বের হতে তাহলে ওই রকম বিপদে পরতে হতো না’।
মৌনোতা মুচকি হেসে বলে
‘তোমার কি দোষ ছিলো। ভাগ্যে ছিলো তাই’।
‘তুমি ভাইয়া কে না বলে গেলে আরো বড় বিপদ হতো। ভাগ্য ভালো তুমি বলে গেছিলে’।
‘না আরিয়া আমি তোমার ভাইয়া কে কিছু বলি নাই। আমি নিজেও জানিনা তোমার ভাইয়া কি ভাবে আসলো’।
‘কিহহহহহহ! ভাইয়া কে তুমি কিছু বলো নাই’?
মৌনোতা মাথা নাড়ায়।
‘যাই হোক ভালো হয়েছে। ভাইয়া কে অনেক ধন্যবাদ’।
‘অনেক কথা হয়েছে এখন খেয়ে নেও। তুমি আজ কলেজ জাবে’?
মৌনোতা ট্রে আরিয়ার হাতে দিতে দিতে বলে। আরিয়া মাথা নাড়ায়।
অন্ধকার গোডাউনে বসে সিগারেট খাচ্ছিলো নিলয়। ওর সামনে বসে আসে আসিফ রিমন। আরো তিন জন লোক পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
‘তোর কি মনে হয় কাজ টা কে করেছে’?
বলে আসিফ।
নিলয় চেয়ারে হেলান দিয়ে সিগারেটের ধোঁয়া উপরে উঠিয়ে বলে
‘জানিনা’।
‘আচ্ছা মেয়েটা কি বলেছে ও কেনো পালিয়েছে’?
নিলয় মাথা নাড়ায়।
‘কেনো’?
‘মেয়েটার বয়ফ্রেন্ড আছে। আর ওর বাবা অন্য একটা ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে ছিলো তাই’।
‘তাহলে মেয়েটা কে দিয়ে এখন কি করবি’?
‘বউ আমার। আর বউ দিয়ে মানুষ কি করে’।
শান্ত কন্ঠে জবাব দেয় নিলয়।
আসিফ বলে
‘কার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো’?
নিলয় সিগারেটে টান দিয়ে বলে
‘সেটা বলে নি। শুধু বলেছে এক ইন্সপেক্টরের সাথে’।
ইন্সপেক্টরের কথা শুনে আসিফ ঢোক গিলে।
‘কম্পনের সাথে না তো’?
নিলয় বিরক্ত চোখে তাকায় আসিফের দিকে।
‘দুনিয়াতে কি কম্পন ছাড়া আর কেউ ইনেস্পেক্টর নেই’?
‘দোস্ত রাগ করিস না। ওর কথা লজিক আছে। তুই একটা বার ভাব মেয়েটাকে মারা জন্য কিছু মানুষ উঠে পরে লেগেছে। হতে পারে কম্পনের লোক’?
বলে রিমন।
নিলয় মুচকি হেসে বলে
‘শা*লা*র*পু নিজের বউ কে কেউ মারবে? যদি কম্পনের বউ হই তবে ও অকে কেনো মারবে ও তো চাইলেই ওকে তুলে নিয়ে যেতে পারে’।
‘তাহলে কি নুহাশ’?
নিলয় সিগারেট ফেলে পা দিয়ে পিশে বলে
‘ওহুম’।
‘তাহলে’?
নিলয়ের ফোন বেজে উঠে।
_________________________________*
মৌনোতা নিজের ঘরে বসে শাড়ি বাজ করছিলো। তখন বুলবুলি আসে।
‘ও নতুন ভাবি আমু’?
মৌনোতা দরজার দিকে তাকিয়ে বলে
‘হুম আসো’।
‘কি করো নতুন ভাবি’?
‘এইতো শাড়ি ভাজ করি। আসো বসো’।
‘আমি থাকতে তুমি কিয়ারে কাম করতাছো। দেও আমি ভাজ করে দেই’।
মৌনোতা মুচকি হেসে বলে
‘না এই টুকু আমি করি। সারা দিন তো বসেই থাকি। তোমাদের বাসায় কে কে আছে’?
‘আমি আমার মায়। আমার মায় গিরামের বাড়ি থাকে। আমার যহন ভালো লাগে তহন যাই। তুমাগো বাড়িতে কেরা কেরা আছে ভাবি’?
‘আমার বাবা ফুপু আর আমার ছোট বোন’।
‘আমার তো ছোট ভাই বোন ও নাই। আমি আর আমার মাই। তাও মাই আবার গিরামে থাকে। ভাবি তুমারে আর ভাইরে মেলা সুন্দর দেহা যায়’।
মৌনোতা উঠে শাড়ি গুলা কাবাডে রাখতে যায়। বুলবুলির কথা শুনে মৌনোতা মুচকি হাসে। তখন ঘরে আসে নিলয়। নিলয় কে দেখে বুলবুলি ছুটে বেরিয়ে যায়। নিলয় শার্ট খুলে সোজা শাওয়ার নিতে চলে যায়।
মৌনোতা নিচে গিয়ে খাবার রেডি করে নিলয় কে ডাকতে যায়। কাকুলি চৌধুরীর ডায়বেটিক্স একটু বেরেছে তাই সে শুয়ে রয়েছে। নিলয় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুলে জেল লাগাছিলো। মৌনোতা দরজার কাছে গিয়ে মৃদু স্বরে ডাকে
‘খাবার রেডি আসেন’।
নিলয় না ঘুরেই বলে
‘ভেতরে আসো’।
মৌনোতা ভ্রু বাকায়।
‘কেনো’?
নিলয় বাকা চোখে তাকিয়ে বলে
‘শুট করবো তাই’।
মৌনোতা ঢোক গিলে। কথায় কথায় এই রকম ট্রেড দেই এই লোক। শুট করে দিলেই তো হয়। মৌনোতা ধীর পায়ে হেটে ভেতরে আসে। নিলয় জেল মাখতে মাখতে বলে
‘তোমার বয়ফ্রেন্ডর নাম কি ছিলো’?
নিলয়ের এহেন কথায় কিছুটা বিচুলিত হয় মৌনোতা। ধতমত করতে করতে বলে
‘কেনো’?
নিলয় ঘার বাকিয়ে তাকিয়ে বলে
‘তার কাছে তো ফিরিয়ে দিতে হবে তোমাকে। তার সম্পর্কে না জানলে কি ভাবে দিবো’?
‘ইসরাক’।
নিলয় ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে বলে
‘পরিচয় কি ভাবে’?
‘সেম কলেজে পরতাম’।
‘রেলেশন কত দিনের’?
‘সাত মাস হবে’।
নিলয় বাকা হেসে বলে
‘এই সাত মাসে কতটুকু চেনেছিলে ওকে’?
মৌনোতার অসস্থি হয়। তার পর ও বলে
‘ও অনেক ভালো। আমাকে অনেক ভালোবাসে। ভালো ফ্যামিলির ছেলে’।
নিলয় বাকা হেসে বলে
‘পৃথিবীতে সব চেয়ে দ্রুত পরিবর্তন হয় মানুষ। প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে পরিবর্তন হয়। মানুষকে বুঝতে গেলে এক জনম পারি দিলে ও বোঝার শেষ হবে না। আর তুমি কিনা সাত মাসেই চিনে ফেলেছো। গুড জব’।
নিলয় কি বোঝাতে চাইলো মৌনোতার বোধগম্য হলো না। ও শান্ত চোখে তাকিয়ে বলে
‘মানে’।
‘আমার খুদা লাগছে। নিচে যাওয়া যাক চলো’।
নিলয় আর কথা বারায় না। মৌনোতা ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই মানুষ টা কে ও তো বুঝতে পারে না।
______________________________♦
নিজের উপর থেকে নুহাশ কে সরিয়ে পাশে থাকা পাতলা শাড়ি দিয়ে নিজের নগ্ন দেহো খানা ঢাকছে সারা। কাল সারা রাত সে নুহাশের সাথে থেকেছে। শুধু কাল রাত ই না প্রাই ওরা দু জন এক সাথে থাকে। শাড়ি পরতেই নুহাশ পেছন থেকে জরিয়ে ধরে ঘারে নাক ঘসতে ঘসতে নেশালো কন্ঠে বলে
‘আরেকটু থাকো না বেবি’।
সারা ওর ব্লাউজ হাত্রে খুজতে খুজতে বলে
‘আজ না সোনা। আবার অন্য দিন’।
নুহাশ বাধন আরো শক্ত করে ওর ঘারে গোলায় চুমু খেতে থাকে। সারা ব্লাউজ খোজা বাদ দিয়ে দুই হাত দিয়ে জাপটে ধরে নুহাশ কে। নুহাশ ওকে ওর দিকে ঘুরে ঠোঁটে লম্বা করে চুমু খায়। সারা নুহাশকে বাধা দেয়। অনেক লেট হয়ে গেছে। এক বার অফিসে যেতে হবে। আবার অন্য দিন আজ আর না। নুহাশ আর একটা চুমু খেয়ে ফ্লোর থেকে ব্লাউজ এনে দেয়। সারা ব্লাউজ পরতেই নুহাশ তার হুক লাগিয়ে দেয়। সারা ওর ব্যাগ নিয়ে রেডি হয় বার হওয়ার জন্য। দুই জন হাগ করে। সারা বের হতে গিয়ে আবার থামে।
‘নিলয়ের সাথে যে মেয়েটার বিয়ে হয়েছে ওকে চিনো’?
নুহাশ ভ্রু বাকিয়ে দুই দিকে মাথা নাড়ায়।
‘কেন’?
”মেয়েটাকে আমি শেষ শেষ করবো তাই’।
নুহাশ চোখ ছোট ছোট করে তাকায়।
‘কেনো’?
‘এমনি বেবি। আচ্ছা বেবি আজ আমি যাই। বাই’।
নুহাশ মুচকি হেসে বিদায় জানায়। সারা বের হতেই বিছানায় বসে নুহাশ শয়তানি হাসি দেয়।
‘আমার শিকার ও। আর আমি চিনবো না। ছিলি গার্ল’।
নুহাশ টেবিলের উপর থেকে ফোন নিয়ে নিলয়কে একটা টেক্সট করে। তার পর শার্ট নিয়ে বের হয়ে যায়।
_________________________________
‘ভাবি ভাবি তুমি কি ব্যাস্ত’?
হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকে আরিয়া। মৌনোতা বেল্কনিতে থাকা ফুলের টবে পানি দিচ্ছিলো। আরিয়ার কন্ঠ পেয়ে বলে
‘আরিয়া আমি বারান্দায়’।
‘ভাবি একটু নিচে যাবো চলো। একটা জিনিস পার্সেল করতে হবে। চলো আমার সাথে’।
নিলয় ওকে বাড়ি থেকে বের হতে মানা করেছে। যদি যানে তাহলে ওকে শুট করে দিবে। কিন্তু আরিয়া তো ওর বোনের মত।
‘কি এত ভাবছো? যাবো আর আসবো। চলো না প্লিজ’।
মৌনোতার ইচ্ছা না থাকা সত্বেও ও রাজি হয়। আর কাছেই তো যাবে। কোনো সমস্যা হবে না।
আরিয়া আর মৌনোতা বের হয়। বাসা থেকে হাটতে হাটতে ওরা একটা গাছের নিচে এসে দাঁড়ায়। মৌনোতা ঢোক গিলে। যদি আজ কিছু হয় নিলয় ওকে সত্যি শুট করে দিবে। আরিয়া মৌনোতা কে দার করে রেখে একটু এগিয়ে যায়। জায়গাটা নির্জন। এমন সময় পেছন থেকে কেউ একজন ডাকে। মৌনোতা ঘাব্রেরে যায়।
‘আসালামু আলিকুম ভাবি’।
মৌনোতা পেছন পিরে তাকায়। লোকটা কে ও চিনে তবে নাম জানে না। নিলয়ের সাথে দেখেছে। প্রথম যে দিন নিলয়েরর সাথে দেখা হয়েছিলো সেই দিন ও দেখেছে। মৌনোতা মুচকি হেসে জবাব দেয়
‘ওলাইকুম আসলাম ভাইয়া’।
‘আমাকে বোধায় চিনতে পারেন নি। আমি রিমন নিলয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ‘।
‘চিনেছি তবে নামটা জানতাম না’।
‘কেমন আছেন? একাই এসেছেন? নিলয় কই’?
‘না একা আসি নি। আরিয়া ও এসেছে। ওর একটা পার্সেল নিতে এসেছি’।
আরিয়া ওর পার্সেল নিয়ে আসে। রিমন কে চিনতে পেরে কথা বলে
‘কেমন আছেন ভাইয়া’?
‘জি ভালো। তুমি কেমন আছো’?
‘ভালো’।
‘ভাবি এই ভাবে রাস্তায় দারিয়ে কথা বলে কেমন দেখা যায় চলেন একটা কফি শপ এ বসি’?
‘না ভাইয়া আজ না। দেরি হয়ে যাবে। আপনি বাসায় চলুন না’?
‘না আজ না অন্য এক দিন। আজ একটু ব্যাস্ত আছি। বোন কে ক্রোসিং থেকে আনতে যাচ্ছি’।
‘আচ্ছা একদিন সময় নিয়ে আসবেন’।
‘ ওকে। ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ’।
রিমন চলে যেতেই আরিয়া পেছন ফিরে তাকায়।
‘ কি দেখছো তাড়াতারি চলো’।
রাত তখন এগারোটা। নিলয় এখনো বাসায় আসে নি। সবাই খেয়ে যার যার রুমে চলে গেছে। মৌনোতা বেল্কনিতে বসে গুন গুন করছিলো।
‘মৌনোতা মৌনোতা’।
নিলয়ের মুখে ওর নাম শুনে বুক কেপে উঠে মৌনোতার। নিলয় তো ওকে মৌনোতা বলে ডাকে না। তাহলে আজ কি হলো। ও ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকে। নিলয়ের চোখে আগুন দপ দপ করছে। চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে মৌনোতার দিকে। মৌনোতা ভয়ে ঢোক গিলে।
‘তুমি বাইরে গেছিলে’?
মৌনোতা আত্মার পানি সব শুকিয়ে যায়। কোনো ঝামেলা তো হয়নি তাহলে এত রাগের কি আছে।
মৌনোতা মাথা নামিয়ে ফেলে।
‘গেছিলে’?
মৌনোতা উপরে নিচে মাথা নাড়ায়। হাতের ব্যাগ টা ছুড়ে ফেলে পকেটে থেকে বন্দুক বের করে মৌনোতার কপালের মাঝখানে ধরে। এক হাত দিয়ে ওর কোমোর চেপে ধরে। ব্যাথায় মৌনোতা ফুপিয়ে উঠে।
‘তোমার সাহস হলো কি ভাবে আমার কথা অমান্য করার? তোমাকে আমি হাজার বার নিসেধ করেছি বাইরে না যেতে। দরকার হলে আমাকে বলতে আমি নিয়ে যেতাম। তুমি কোন সাহসে বাইরে গেলে’?
মৌনোতার হাত পা অবশ হয়ে আসে। আত্মাটা মনে হয় এখন বের হয়ে আসবে। মৌনোতা ফোপাঁতে ফোপাঁতে কেদে উঠে। দুই চোখ দিয়ে অনরগল পানি পরতে থাকে।
নিলয় ওর কান্না দেখে ওকে ছেড়ে দেয়। বন্দুক পেকেটে ভরে বলে
‘সরি। আমি এই ভাবে বলতে চাই নি। কান্না করো না প্লিজ’।
মৌনোতা নিশব্দে কাদতে থাকে।
নিকল ওর রাগ হজম করে শান্ত কন্ঠে বলে
‘শান্ত হও। কান্না থামাও’।
মৌনোতা ফোপাঁতে থাকে। নিলয় এক ধমক দিয়ে বলে
‘কান্না থামাইতে বলছি না’।
মৌনোতা এক ঢোক গিলে ফোপানো বন্ধ হয়ে যায়। পাথরের মত শক্ত হয়ে যায়।
‘আর যেনো না দেখি’।
নিলয় আর কিছু না বলে ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াসরুমে চলে যায়।
চলবে…
®তোয়ামনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here