নীলমনি পর্ব ৯+১০+১১

0
53

#নীলমনি
#তোয়ামনি
[কপি করা নিষেধ]
নীলমনি ~৯+১০+১১
অন্ধকার জঙ্গল। তার গভীরে পরিত্যক্ত এক গোডাউন। চারিপাশ নির্জন। আশে পাশে কোনো বাড়িঘর কিছুই নেই। জঙ্গল থেকে অনেক দূরে হাই রোড। শুধু বিশাল বিশাল গাছ। এখানে দিনের বেলাই কেউ আসার সাহস পায় না। আর রাত তো দূরেই। ঘরটিতে চারজন লোক। দুই জনের হাতে গান আর দুই জনের হাতে চাপাতি। তারা একটা লোকে চেয়ারের সাথে বেধে রেখেছে। লোকটার মুখ গামছা দিয়ে বাধা। লোকটা অন্ধকারে চারজনের দিকে তাকিয়ে আছে। অস্পষ্ট ভাবে কিছু বলছে। তবে লোক গুলো কোনো উত্তর দিচ্ছে না। লোকটার হাত পিঠের পিছিনে নিয়ে বাধা। লোকটার সামনে চার পায়া একটা টেবিল।
লোকোটা ছুটার জন্য উসখুস করছে কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। তাকে কেউ টাস ও করছে না।
সেই মূহুর্তে ঘরে প্রবেশ করে সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত এক সুদর্শন লোক। তার বাম হাতে গান আর ডান হাতে চাপাতি। লোকটার মুখ অন্ধকারে বোঝা যাচ্ছে না। তার সাথে আরো দুই জন লোক আসে। তাদের হাতে কিছুই নেই।
লোকটা ঘরে প্রবেশ করতেই একটা লোক চেয়ার টেনে দেয় তাকে বসর জন্য। অন্ধকারে লোকটা ডানে বামে মাথা কাত করে অদ্ভুত ভঙ্গিতে চেয়ার এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে বসে। পাশে থাকা লোকটা কে ইশারা করে বাধা লোকটার মুখ খুলে দিতে। লোকটা ওই বাধা লোকটার মুখ খুলে দেয়।
‘আমারে কেন ধইরা আনছেন কি করছি আমি’?
লোকটা ছাড়া পেয়ে তিব্র রাগ নিয়ে কথা টি বলে।
চেয়ারে থাকা লোকোটা চাপাতি টেবিলে রেখে গান টা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে। তার পর প্রশ্ন করে
‘তোকে কে পাঠিয়েছিলো’?
লোকটা কোনো উত্তর দেয় না। চুপ করে বসে থাকে। লোকটার প্রশ্নের ধরন শুনে বুক কাপে বাধা লোকটার। সাদা পাঞ্জাবি পরা লোকটা ডানে বামে মাথা কাত করে ইশারা দেয় পাশে থাকা লোকটা কে। লোকটা গিয়ে এক ঘুসি দিয়ে রক্ত বের করে। লোকটা গোঙাতে গোঙাতে বলে।
‘ক..কম্পন। আ আ আ আ আ আ।
লোকটার কথা শেষ করেই লোকোটি আর্তনাদ করে টেবিলে মুখ ধুব্রে লুটিয়ে পরে। চেয়ারে বসে থাকা লোকটির বন্দুক টি থেকে পর পর দুইটি গুলি লোকটার বুক ঝাঝরা করে দেয়। বন্দুক এ ফু দিয়ে বলে
টেবিলের উপর থেকে চাপাতি নিয়ে লোকটার দুই হাত এক এক কোব দিয়ে নামিয়ে দেয়। রক্ত ছিটে যায় তার সাদা পাঞ্জাবি তে। চারিপাশে রক্ত বন্যা হয় তবে তা অন্ধকারে লাল মনে হয় না। তার পর বলে
‘ ওকে টুকরো টুকরো করে যেনো নদিতে’।
লোকটা বন্দুক পকেটে ভরে চাপাতি রেখে বাইরে বের হয়। তার সাথে আসা দুই জন লোক ও বার হয়। আর বাকি লোক তাদের কাজ শুরু করে।
বাইরে আসার সাথে একজন প্রশ্ন করে হাত দুইটা কেনো ও কাটলো। সব তো ওখানকার লোকরাই করতে পারতো। লোকটা ডানে বামে মাথা কাত করে বলে
‘নীলের মনির দিকে হাত বাড়িয়ে ছিলো। তাই’।
চৌধুরী বাড়িতে মেহেন্দি অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে সবাই মেহেদি পরছে। মৌনোতার হাতে মেহেদি পরাছে হেনা আর্টিস্টরা। ও চুপ চাপ তা দেখছে। ওর পরনে সবুজ শাড়ি। আরিয়ার মেহেদী পরা শেষ হলে মৌনোতার কাছে এসে গান শুরু করে
‘হাতো মে ইন হাতো মে
লিখতিহো মে সাজনাকা নাম’।
সবাই গানে তাল দেয়। মৌনোতা হাসার চেষ্টা করে। তার মনের ভেতরের অস্থিরতা কে ধামাচাপা দেয়। ও যাই করুক ওকে পালা তেই হবে। কিছু তেই ওই ভিলেন কে বিয়ে করবে না। রিংকি আর্টিস্টদের বললো নিলয়ের নাম টা যেনো ভালো করে লেখে দেয় মৌনোতার হাতে। মৌনোতা বিরক্ত বোধ করে। নিলয় বাদে ভিলেন লিখলে বেশি সুন্দর হবে। সে মনে মনে আওরায়। ওর হাতে সুন্দর করে নিলয়ের নামটি লেখে। খুব সুন্দর দেখা যাচ্ছে। সবাই বলে
‘দেখছোছ কত ভালোবাসা কত সুন্দর লাগছে।
‘হায় হায় নজন না লাগে যাই’।
‘ও মেন্দি আলা মেয়ারা। আমারে ও একটু মেন্দি লাগিয়া দেও। আমি ও আমার নাতির বিয়ার নাচুম’।সাহেরা খাতুন বলতে বলতে মৌনোতার পাশে এসে বসে।
‘দেহি রে নাত বউ কেমন লাগতাছে’।
মৌনোতা ওর দুই হাত বাড়িয়ে দেয়।
সাহেরা মৌনোতার থুতনিতে চিমটির মত করে ধরে বলে
‘আমার নাতির ভালোবাসা এই রকম গাঢ় হক। সুখি হও মা। ও মেয়েরা আমারে ও একটু মেন্দি দেও’।
মৌনোতা মনে মনে বিরক্ত হয়।
একজন সাহেরার হাতে মেহেন্দি পরা শুরু করে।
তখন সেখানে উপস্থিত হয় নিলয়ের। অনন্যা ডাকে ভাইয়া এই দিকে আসো। অনন্যা দৌড়ে নিলয় কে নিয়ে আসে। তার পির মৌনোতার পাশে বসায়।
‘ভাইয়া দেখো ভাবীর হাতে কি সুন্দর লাগছে তোমার নাম’।
‘হাতে লিখে কি লাভ। তোর ভাবির মনে তো লিখবোনা’।
কথাটি মৌনোতার কানের কাসে এসে বলে। মৌনোতা চোখ গরম করে তাকায়। দাতে দাত চেপে বলে
‘বিয়ে টা কোনো দিন ও হবে না। মিস্টার ভিলেন’।
নিলয় বাকা হেসে বলে
‘তু এত্নি খুব সুরাত হে
ফিদাদি দার পে তেরে’।
মৌনোতা চোখ সরিয়ে নেয়।
তার আর কিছু বলতে ইচ্ছা করছে না। ভিলেন টার গানের কন্ঠ অনেক সুন্দর। তবে ওর কাছে বিষের মত লাগে। শুধু মনে মনে আওরায়
‘ভিলেন’।
কাকুলি মিষ্টি নিয়ে আসে। সবাই কে মিষ্টি খেতে বলে। আরো নানা ধরেন খাবার আনে। মৌনোতার দুই হাতেই মেহেদী পরানো হয়েছে তাই সে হাত দিয়ে খেতে পারবে না। সবাই যার যার মত খাওয়া শুরু করে। নিলয় একটা মিষ্টি নিয়ে মৌনোতার মুখের দেইকে নেয়। বলে
‘নেও হা কর আমি খায়িয়ে দেয়। তোমার হাতে তো মেহেদি’।
‘খাবো না আমি’।
নিলয় ওর কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে
‘তাহলে গুলি খাবে। ওই টা কিন্তু মিষ্টির থেকে বেশি ট্রেস্টি। ট্র‍্য করতে পারো। দিবো’?
মৌনোতার গা জ্বলে উঠে। অগ্নি চোখে তাকিয়ে বলে
‘আমি তো খাইতেই চাইতেছি আপনি তো দিতেছেন না। মেরে ফেলুন না আমাকে। আমি আপনাকে কখনো বিয়ে করবো না। ভিলেন আপনি’।
নিলয় দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে
‘আরে এতো তাড়াহুড়ো কেন বউ। আগে বিয়ে টা করে নেই। বাসর হানিমুন এই সব শেরে নেই। একটা ফুটবল টিমের আব্বু হয়ে। তার পর ভেবে দেখবো । এখন হা করো চুপ চাপ’।
মৌনোতার শরীর রে রে করে উঠে। লোকটা বলে কি। ও অবিশ্বাস্য চাওনি নিয়ে তাকিয়ে থাকে।লোকটা শুধু ভিলেন না অসভ্য ও। নিলয় অবুজ শিশুর মত তাকিয়ে থাকে ওর দিকে। মৌনোতা দাতে দাত চেপে বলে
‘আপনি শুধু ভিলেন না। চরম অসভ্য ও’।
‘জানি মনিমালা। তাই তো তোমাকে ভালোবেসেছি। এখন হা কর। এত কথা এখনি বলে বাসর ঘরে কি বলবে। এখন খাও’।
‘আপনি আরেকবার শুধু বাজে কথা উচ্চারণ করে দেখেন আমি আপনার গান নিয়ে আপনাকে শুট করবো। তাতে আমার জেল হলে হক। অসভ্য ভিলেন’।
রাত প্রায় দুইটার কাছা কাছি। সবাই শুয়ে পরেছে। মৌনোতার কিছু তেই ঘুম আসছে না। ওর পাশে অনন্যা আরিয়া। ও বিছানা থেকে উঠে বেলকনিতে যায়। হাসপাস লাগছে অনেক। নিজের মেহেদি রাঙানো হাতের দিকে তাকালো। নিলয়ের নাম টা দেখে বিরক্তিতে ভ্রু বাকায়। অসভ্য ভিলেন। তার হাত ও জায়গা করে নিয়েছে।
বাবার কথা মনে পরছে। ও তো বাবা কে পছন্দ করে না তাহলে আজ হঠাৎ কেনো এতো মনে পরছে তার কথা। আকাশের দিকে তাকিয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে থাকে। না ও ঠিক করেছে যে বাবা ওকে ভালোবাসে না তার জন্য ওর মন খারাপ করার কনো দরকার নেই। ও যা করেছে বেশ করেছে। কিন্তু যাকে ভরসা করে পালাও সে কোথায় আছে। একবার নিলয়ের সাথে কথা বলা দরকার। লোকটা কে সব জানলে যদি একটু মায়া হয়। বিয়ে টা যদি আটকায়। মৌনোতা শাড়ি ঠিক করে নিলয়ের ঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
দরজায় কারো করা আঘাত শুনে কাচা ঘুম ভেঙে নিলয়ের। কিছুক্ষন আগে শুয়ে ছিলো এখনি আবার কার দরকার পরলো ওর। মেজাঝ টা কেমন চড়ে উঠে। আওয়াজ ক্রমাগত বাড়তেই থাকে। নিলয় অলস শরীর নিয়ে উঠে বসে। পাশে থাকা বেড টেবিলে থাকা লাইট জ্বালায়। তার পর দরজা খুলে। দরজা খুলেতেই মৌনোতার মায়াভরা মুখ দেখে চোখ মেলে ভালো ভাবে তাকায়। মনে মনে একটু চিন্তিত হলে ও মুখে কিছু বলে না। এক ভ্রু উচু করে বলে
‘আর একটা দিন সহ্য হলো না। পশুদিন ই তো এক সাথে থাকবো। তখন যা খুশি করো’
মৌনোতা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। এই অসভ্য লোকের সাথে কথা বলা দায়। তবু ও বলে
‘আমি আপনাকে কিছু বলতে চায়’।
‘উফফ মনিমালা আমাকে লজ্জায় ফেলো না’।
মৌনোতা চোখ বন্ধ করে ফেলে। বিরক্ত কন্ঠে বলে
‘নাটক করবেন না। আমি আপনাকে সত্যি কিছু বলতে চায়। কথা গুলা আজ না বলতে পারলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। প্লিজ এমন করবেন না আমার কথা গুলা শুনেন’।
নিলয় ডানে বামে মাথা কাত করে বলে
‘বলো’।
‘ভেতরে আসি’।
‘বিয়ের আগে রুমে ঢুকবে! কি সাংঘাতিক তুমি। কেউ দেখলে বলবে দেখছছ কেমন বউ এক দিন সহ্য হলো না’।
মৌনোতার শরীর শিউরে উঠে৷ এই লোকটা এত অসভ্য কেনো।
‘আপনি যদি আরেকটা বাজে কথা বলছেন আমি আপনাকে শুট করবো’।
‘আম্মু আম্মু’!
নিলয় আচমকা জোরে চেচাতে লাগলো। মৌনোতা ঘাব্রে গেলো। কেউ যদি তাদের এত রাতে এক সাথে দেখে খারাপ ভাবে।
‘এই এই এই আপনি চেচাছেন কেনো। কেউ দেখলে খারাপ ভাবে। থামুন বলছি’।
‘সবাই দেখুক আমার হবু বউ কত টা অধৈর্য। এক দিন সহ্য হলো না। এখনি বরের ঘরে ঢুকতে চাইছে। তার সাথে কথা বলতে চাইছে। ঘরে ঢুকতে দিচ্ছি না বলে আমাকে আবার ট্রেড দিচ্ছে’।
মৌনোতা কপাল চাপ্রালো। তার ঘাট হয়েছে এখানে আসা। এই লোকের সাথে কথা বলা বৃথা। এত অসভ্য ইতর লোক। এক বার বের হতে পারলে আব্বু কে বলে ওকে জেলে ভরবে।
‘আচ্ছা এখানি বলছি। আপনি কেনো আমাকে বিয়ে করার জন্য খেপেছেন? আপনি তো আমাকে চিনেন ও না। আর আমার সমধে জিজ্ঞাসা ও করলেন না। আমি কাউকে ভালোবাসি কিনা সেটা ও জানতে চাইলেন না। কেনো আমাকে জোর করে বিয়ে করছে’?
‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’।
নিলয়ের নির্বিকার ব্যাকে অবাক হয় মৌনোতা।
‘প্রথম দেখায় কেউ কারো প্রেমে পরতে পারে’?
‘যে সত্যি কারের ভালোবাসে সে একবার দেখাতাই তার প্রিয়শির প্রেমে পরে’।
‘প্রেম আর ভালোবাসার মধ্যে অনেক ফারাক আছে। বোঝেন এটা’?
নিলয় বাকা হাসি দিয়ে বলে
‘প্রেম করলে তাকে এক সময় ছাড়া যায়। কিন্তু ভালোবাসলে কেউ কাউকে ছাড়তে পারে না। যত যাই হক তাকে ছাড়া সে থাকতে পারে না। জীবনের বিনিময়ে হলেও তাকেই ভালোবাসে। বুঝলা মনিমালা’।
মৌনোতা বিরক্তে ভ্রু বাকায়।
‘যে ছেলে হাজার মেয়ে কে ছুয়েছে হাজার মেয়ের সাথে প্রেমের নাটক করেছে সে কেউ কি ভালোবাসতে পারে’?
নিলয় স্ক্রু হাসলো।
‘আমার ভালোবাসার প্রমান চাও’?
‘আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি’।
নিলয় ডানে বামে মাথা কাত করে বলে
‘সে কি তোমায় ভালোবাসে’?
‘হুম বাসে’।
‘আর ইউ সিয়ুর?
মৌনোতা নিলয়ের দিকে চোখ সরায়। নিচের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলে
‘হু…হুম’।
নিলয় স্বশব্দে হেসে উঠে।
‘ও মনিমালা তুমি খুব ভালো জোকস বলতে পারো তো। দারাও একটু হেসে নেই’।
নিলয়ের হাসি মৌনোতার শরীরের রাগ আরো কয়েকশ গুন বাড়িয়ে দেয়। সে রীতিমতো তার ভালোবাসা কে অপমান করছে
‘আপনি হাসছেন কেনো? আমার ভালোবাসার প্রতি আপনার সন্দেহ আছে’?
নিলয় হাসি থামিয়ে বলে
‘মেয়েদের মন নরম। ওরা সবাই কে ভালোবাসতে পারে। কিন্তু ছেলেড়া তার বিপরীত। ওরা সহজে কাউ কে ভালোবাসে না। আর যাকে ভালোবাসে তাকে পৃথিবী উলট পালট করে দিয়ে ও নিজের করে ছাড়ে’।
নিলয়ের ভাব ছাড়া কথার মানে বুঝতে পারে না মৌনোতা। ও অসহায় চোখে তাকায় নিলয়ের দিকে। সত্যি কি সে ভুল মানুষকে ভালোবেসে ছিলো।
‘যদি তোমাকে ওই ছেলে সত্যি ভালোবেসে থাকে তাহলে ওই দিন রাতে কেনো আসে নাই? কেনো এখনো তোমার কোনো খোজ নেয় নাই? বলতে পারো আমাকে’?
মৌনোতা চোখ নামিয়ে ফেলে ওর চোখ দুটি ছলছল করে উঠে।
‘তোমরা মেয়েরা এতো কথায় কথায় ভ্যা ভ্যা করো কেনো। না বুঝে ভুল পথে যাও আবার সুদরে দিতে আসলে কান্না করো। হয়ে গেছে একটা ভুল সমস্যা নেই। আমি তো আছি। তোমাকে আগলে রাখবো। প্রতিদিন রাতে আদর দিবো। প্রতিটি রাত বাসর রাত হয়ে উঠবে। তুমি….’।
‘চুপ অসভ্য লোক। আজে বাজে কথা বলবেন না। আমি আপনাকে কখনো বিয়ে করবো না’।
মৌনোতার চোখের পানি এমনি এমনি থেমে যায়। এই লোকোতা সত্যি অসভ্য।
নিলয় ডানে বামে মাথা কাত করে বলে
‘বিয়েতো তোমাকে করতেই হবে মনিমালাম। ভালোবাসি তোমাকে আমি’।
‘আপনাকে আমি পুলিশ এ দিবো। অসভ্য ভিলেন। আপনি যানেন আমার বাবা একজন ইনেস্পেক্টর। আর আমার সাথে যার বিয়ে ঠিক হয়ে ছিলো সে ও ইনেস্পেক্টর’।
নিলয় ভয় পাওয়ার নাটক করে বলে
‘ও বাবা ভয় পাইছি। ও আল্লাহ আমার খুব ভয় করতাছে। বিয়ের আগে বউ কে ঘরে ঢুকেতে দেই নেই বলে বউ আমাকে পুলিশে দিবো। আমি কই যামু। বিয়ের পর কি সব সময় আমি আদর করতে পারুম। আমার কত কাজ দিনের বেলা। এই বউ তো আমারে মাইরাই ফালাইবো’।
মৌনোতা ভয় পেয়ে যায়। এই অসভ্য ভিলেনের চিৎকারে সবাই না এসে পরে। এই অসভ্য ভিলেন এই রকম মিষ্টি কথা আগে থেকেই বলে। ও ধমকে উঠে।
‘ এই এই চুপ চুপ করুন’।
মৌনোতা হাত নিয়ে নিলয়ের মুখ চেপে ধরে। পায়ের পাতা মেঝে থেকে ওনেক উপরে। শুধু আঙুলে চর দিয়ে রয়েছে। দাতে দাত চেপে বলে
‘আরেকটা শব্দ করলে আমি আপনাকে’।
মৌনোতা পায়ের ভর আর রাখতে পারে না। উবু হয়ে নিলয়ের বুকে পরে। তবে নিলয় ওর হাত স্থির রাখে। ফিসফিসিয়ে বলে
‘হালাল সনদ ছাড়া তুমি আমাকে দুই বার টাচ করেছো বউ। এর প্রতিশোধ শুধে আসলে মুনাফায় উশুল করে নেবো। তুমি কিন্তু একটু বেশি রোমান্স করা যানো। বিয়ের আগেই দুই বার বিয়ের পর জানে আমার অবস্থা কি হবে’।
নিলয় হতাশার শ্বাস ফেলে। মৌনোতার গা গুলিয়ে উঠে। এই অসভ্য লোক সারা দিন আজে বাযে কথা বলে আর এখন তাকে অসভ্য বলছে। ও দ্রুত উঠে নিলয়ের বুক থেকে।
‘অসভ্য ভিলেন। আমি আপনাকে কখনো বিয়ে করবো না’।
কথাটি বলে ঘুরে মৌনোতা রুমে যাওয়ার জন্য। পেছন থেকে নিলয় বলে
‘বিয়ে তো তোমাকে করতেই হবে মনিমালা….’।
মৌনোতা না ঘুরেই মুখ বাকায়। ওর ভুল হয়েছে। ওকে কে ঘুম বাদ দিয়া এই খানে আসতে বলেছিলো। এই ইতর লোকটা এই রকম ই। অসভ্য ভিলেন। মৌনোতা তড়িৎ গতিত্র জায়গা ছারলো।
নিলয় বিজয়ের হাসি হাসে। এখন আপাদত চুপ করানো গেলো। যত তারাতাড়ি বিয়ে টা সেরে ফেক্তে হবে। তা না হলে মনি আবার কখন উড়াল দেয়। নিলয় দরজা আটকে দিলো।
মৌনোতা কে হলুদ শাড়ি পরানো হয়েছে। গায়ে তেমন কোনো গয়না নেই। মৌনোতা বলেছে বেশি কিছু দিয়ে ও সাজবে না। তাই শুধু লাল গোলাপ আর রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে সাজিয়েছে। ওর অসস্থি হচ্ছে। কেনো ও কিছু বলছে না। কাকুলি এসে ওকে পায়েস খাওতে। ঘরে শুধু আরিয়া আর রোহান হিয়া ছিলো। আর বাকিরা যার যার মত ব্যাস্ত।
‘আন্টি আমি আপনাকে কিছু বলতে চাই’।
কাকুলি পায়েস টেবিলে রেখে বলে
‘কি বলবে মা? ভয় হচ্ছে? বাবা মায়ের কথা মনে পরছে’?
‘আমার মা নেই’।
কাকুলির একটু মন খারাপ হয়। উসখুস করতে করতে বলে
‘দুঃখীত মা। আমি সেই ভাবে বলতে চাই নি’?
মৌনোতা কাকুলির হাত ধরে বলে
‘না আন্টি সমস্যা নেই। মা অনেক ছোট বেলেয়াই মারা গেছে। আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। বাবা আমাকে একজন ইনেস্পেক্টর সাথে বিয়ে ঠিক করেছিল। বিয়ে টা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি নি তাই পালিয়ে এসেছি। রাস্তা আপনার ছেলের সাথে পরিচয়’।
মৌনোতা কি বলতে চাইছে বোধগম্য হয় না কাকুলির। ও করুন চোখে তাকিয়ে থাকে মৌনোতার দিকে। মা মরা মেয়ে। কাকুলি মৌনোতা কে বুকের সাথে চেপে ধরে।
‘আমি অনেক অনেক ভালোবাসবো। কখনো মায়ের অভাব বুঝতে দিবো না’।
কাকুলি মৌনোতার হাত ধরে বলে
‘তোমার কাছে শুধু এক্টাই রেকোএস্ট আমার ছেলে টা কে দেখে রেখো’।
‘আন্টি আমি বিয়ে’
‘ফুপু এইবার মনি কে নিয়ে যেতে হবে। তারাতাড়ি করো’।
‘হ্যা হ্যা। মা এই পায়ের টুকু খেয়ে নেও। তোরা ওকে নিয়ে আই আমি যাই’।
‘আন্টি শুনেন’।
‘আমার ওই দিকে কাজ আছে মা। পরে এক সাথে বসে অনেক আড্ডা দিবো। এখন আসি’।
কাকুলি আর দেরি করলো না। আরিয়া অনন্যা রিংকি সবাই মৌনোতা কে নিয়ে নিচে নামে’।
মৌনোতাকে স্টেযে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওর শ্বাস ভারি হয়ে আসছে। অসহ্য লাগছে। সবাই নিলয়ের জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু ওর দেখা নেই। কাল রাতের পর আর দেখা নেই ওদের মাঝে। আরো কিছুক্ষন সময় কেটে গেলো কিন্তু নিলয়ের দেখা নেই। সবাই জার জার মত ব্যাস্ত।
তখন বাড়িতে আবির্ভাব হয় বুকেট হাতে এক রমনীর। মেয়েটার পরনে হালকা গোলাপি রঙের পাতলা শাড়ি। শর্ট হাতা ব্লাওজ। মেদ হীন দেহ। অপরুপ সুন্দুরী। বাড়ির প্রতিটা পুরুষ হা করে তাকিয়ে আছে মেয়েটার দিকে। শুধু পুরুষ ই নয় মহিলা রা ও তাকিয়ে আছে। কোহিনুর মুখ বাকিয়ে অন্য দিকে তাকায়। তখন দেখে অর্নব হা করে তাকিয়ে আছে। ও রিংকির কাছে গিয়ে বলে
‘দেখ তোর জামাই। এই বার হাত ছাড়া হলো’। রিংকি অর্নবের দিকে তাকায়। অর্নবের তাকানো দেখে রিংকির সারা শরীর জ্বলে উঠে। দারা ওর আজ খবর আছে। রিংকি অর্নবের সামনে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু অর চোখ ওই তনায়ার দিকে নিবিদ্ধ। রিংকির হাইট যেহেতু অনেক শর্ট তাই অর্নব আরো খেল করে নি। পেটের মধে কুনুই দিয়ে গুসি দেয়। অর্নবের জ্ঞান ফিরে আসে। পেটে হাত দুই হাত চেপে ধরে। চোখ কুচকে মুখ ফুলিয়েফেলে।
‘উফফ এই ভাবে কেউ মারে’।
‘রুমে চলো। আজ তোমার এক দিন কি আমার এক দিন’।
‘মেয়েটা কে’।
রিংকি চোখ গরম করে তাকায়। রাগে ফুসতে ফুসতে অর্নবের পাঞ্জাবির কলার ধরে রুমের দিকে নিয়ে যেতে যেতে দাতে দাত চেপে বলে
‘চলো বলছি মেয়েটা কে’।
কোহিনুর অন্যান্য আরিয়া সবাই স্বশব্দে হেসে উঠে।
‘কঙ্রাচলেশন (congratulations) মৌনোতা’!
মেয়েটা মৌনোতার কাছে এসে বুকেট টা ওর হাতে দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। মৌনোতা মুচকি হেসে বুকেট টা নেয়।
‘থ্যাংকস’।
আরিয়া মেয়েটার কাছে এসে হাগ করে বলে
‘হায় সারা আপু। কেমন আছো’?
‘ও হ্যালো বেবি। ফাইন। হাও আর ইউ’?
‘জী ভালো। তুমি আসবে আগে কেনো বল নি’?
‘সারপ্রাইজ। কেনো খুশি হও নি আমি এসেছি’?
‘না না অনেক খুশি হয়েছি। আজ পুরু ওকেশন আন্টেন্ড করবে তো’?
‘ আই উইল ট্রাই’।
‘ওকে’।
‘নীল কই’?
‘ভাইয়া এখনো আসে নি। তুমি ভাবির সাথে গল্প করো’।
সারা ঘার ঘুরিয়ে মৌনোতার দিকে তাকায়৷ তার পর লম্বা করে হাসে।
‘শিউর’।
সারা মৌনোতার পাশে গিয়ে বসে।
‘হ্যালো মৌনোতা। কেমন আছো’?
‘ আলহামদুলিল্লাহ। আপনি’?
‘ই আম ফাইন। আমাকে চেনো’?
মৌনোতা ডানে বামে মাথা নাড়ায়।
‘ওমাইগোড। নীলের বউ হবে আর আমাকে চেনো না’।
মৌনোতা মনে মনে আওরায় আমি ওই ভিলেন টাই কেই চিনি না। আর আপনি।
‘আমি তোমার উডবির এক মাত্র গার্লফ্রেন্ড। যাকে সে প্রানের থেকে ও বেশি ভালোবাসে। যার সাথে তার সব কিছু হয়ে গেছে’।
মৌনোতার সারা শরীর রে রে করে উঠে। তাই তো ভাবি এই লোকোতা এত অসভ্য কেনো। এই রকম অসভ্য মেয়েদের সাথে মিশে তাইতো। আর মহিলা টা ও কেমন বেলাহাজ সে গুলা আবার বুক ফুলে বলছে।
‘মন খারাপ করো না। যার সাথে সারা জীবন থাকবে তার সমন্ধে সব না জানলে কেমন হয়৷ আমি কিন্তু তোমাকে হার্ড করার জন্য বলছিনা। দেখো না আমার মত সুন্দুরি রুপশী তোমাকে বিয়ে করছে।
ওর চয়েস আছে বলতে হয়’।
সারার টিপ্পানি বুঝতে অসুবিধা হলো না মৌনোতার।ও প্রশস্ত হেসে বলে
‘অবশ্যাই। বর টা তো আমার প্লে বয়। এই টুকু শুন্তেই হবে। আর কি হলো এতো সুন্দর হয়ে বিয়ে তো আমার মত কালি কেই করছে’।
সারা মুখ বাকায়। তার পর আবার হাসে।
‘লেটস সি। বিয়েটা আগে হক’।
মৌনোতা সারা কে আসস্ত করে বলে।
‘বিয়েটা হচ্ছে। আর আপনি কিন্তু কবজি ডুবিয়ে খেয়ে যাবেন। যতই হক আপনার এক্স আর বিয়ে বলে কথা। তাও আবার এত দিনের রিলেশেন’।
সারা দাতে দাত চেপে হাসে। তখন ওর ফোন বেজে উঠে।
‘ওয়ান মিনিট’।
সারা উঠে চলে যায়। মৌনোতা চোখের মনি ঘুরিয়ে মুখ বাকায়। এসে ছিলো ওকে জ্বলাতে
‘হুম’
নিলয় আসা মাত্রই সবাই ওর দিকে ফোকাস করে। ওর পরনে অব হোয়াইট পাঞ্জাবি। ওর সাথে আসিফ রিমন। আরিয়া দৌড়ে ভাইয়ের কাছে যায়।
‘ও ভাইয়া তুমি কই ছিলে? তোমার জন্য ওয়েট করতে করতে সবাই বোর হয়ে গেছে। আসো তারাতাড়ি’।
আরিয়া নিলয় কে টেনে নিয়ে যায়। মৌনোতার পাশে বসিয়ে দেয়। নিলয় অপলক চোখে তাকিয়ে আছে মৌনোতার দিকে। সে কিছু বলতে যাবে তখন তা কে অবাক করে দিয়ে মৌনোতা আকুল কন্ঠে জিজ্ঞাসা করে
‘কই ছিলেন আপনি? নিজের গায়ে হলুদ আর নিজে এতো দেরি করে আসলেন। আমি কখন থেকে এখানে ওয়েট করছি। আমার হাত পা ব্যাথা হয়ে গেছে’।
নিলয় মনে মনে অবাক হলে ও তা প্রকাশ করা না। ডানে বামে মাথা কাত করে বলে
‘এত তারা কেন বউ’?
মৌনোতা বাকা চোখ মেলে উত্তর দেয়
‘নিজের বিয়ে বলে কথা তারাতাড়াহুরো থাকবে না। এত দিন সবার বিয়ে দেখে আসছি আজ নিজের বিয়ে সো আই এম বেড়ি এক্সছাইটেড’।
নিলয় শয়তানি হাসি দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে
‘রেডি ফোর টুমুরো নাইট’।
মৌনোতা বাকা হেসে বলে
‘ইয়া’।
মৌনোতা আর চোখে সারা কে দেখে। সারা ফুসতে ফুসতে অন্য দিকে তাকায়। সাথে সাথে মৌনোতা দাতে দাত চেপে কিরমির করতে করতে বলে
‘আমার থেকে দূরে থাকবেন। এক দম কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। বাজে কথা বলবেন না। আমি আপনাকে বিয়ে কখনো করবো না। অসভ্য ভিলেন’।
ওর শরীরে আগুন জ্বলছে নিলয়ের কথা শুনে। শুধু সারা এই দিকে তাকিয়ে ছিলো বলে ও ওকে জালানোর জন্য নিলয়ের এতো কাছে গিয়ে কথা বলছিলো। তা না হলে এই ভিলেন কে ও বিয়ে ক্রবে অসম্ভব।
মিনিট এর মধ্যে কি ঘটলো কিছুই বুঝলো না নিলয়।ভাই এই মেয়ে মানুষ কে বোঝার ক্ষমতা কেনো আল্লাহ দেয় নাই তাকে। কখন কি হয় বোঝা বড় দায়।
হলুদ এর অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। সাহেরা খাতুনের কথা শুনে সব সাংস্কৃতি নিয়মে হচ্ছে। সবাই এক এক করে হলুদ দিচ্ছে ওদের৷ নিলয় শুধু মৌনোতা কে দেখছে। মৌনোতা আর চোখে এক বার তাকাইয়ে ফুসে উঠে।
সারা আসে ওদের হলুদ লাগাতে। সারা এসেছে নিলয় মাত্র খেয়াল করলো। ভ্রু ও বাকালো। আম্মু ওকে ও ইনভাইট করেছে। দুনিয়ার সবই কে কি ইনভাইট করেছে। সব জাগায় তো ওর গার্লফ্রেন্ডএর অভাব নেই। সবাই এসে যদি আন্দোলন শুরু করে। বিরক্তিতে কপাল কুচকায়
সারা একটা গাধা ফুল দিয়ে হলুদ নেয় তার পর হাসি মুখে নিলয়ের কালে ছোয়া। একটু হলুদ ওর সাদা পাঞ্জাবি তে পরে৷ মৌনোতা কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে বলে
‘ইসসস লাগালেন তো সাদা পাঞ্জাবি তে হলুদ এর দাগ। গায়ে হলুদ এ সাদা পাঞ্জাবি পরতে কাকে দেখছেন দেখান আমাকে। বার বার বলাম এইটা পইরেন না তাও শুনেলন না। ওফ এই ডাগ টা কিভাবে উঠাবো’।
মৌনোতা নিলয়ের পাঞ্জাবি ঝারতে থাকে। সারার মুখ রাগে লাল হয়ে যায়। কত বড় সাহস মেয়েটার।
‘সারা আপু আপনি একটু দেখে হলুদ লাগাবেন তো। দিলেন তো পাঞ্জাবি নষ্ট করে। আমি ভেবেছি একটা মিউজিয়াম বানাবো তাতে আমার বিয়ের ব্যাবহার কৃত সব জিনিস রেখে দিবো। আর আপনি কিনা এইটা নষ্ট করে দিলেন। ধ্যাত’।
নিলয় অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে মৌনোতার দিকে। বাকা চোখে একবার সারা কে দেখে বাকা হাসি দিয়ে মৌনোতার দিকে তাকায়। বাহা বউ তার এত জেইলাস। ও তো প্রতিদিন সারা কে ইনভাইট করবে এই রকম ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।
সারা চোখ মুখ গরম করে উঠে যায়। নিলয় মৌনোতার কানে ফিসফিসিয়ে বলে
‘ দ্যা ড্রামা ইন্ড মনিমালা। শি ইস গোন’।
মৌনোতা একবার সারা কে দেখে রক্তিম চোখে নিলয়ের দিকে তাকায়।
‘ আমি আপনার কোনো কথা শুনতে চাইনা। অসভ্য ভিলেন ‘।
গায়ে হলুদ এর সব নিয়ম শেষ। সবাই জার জার মত ঘরে ফ্রেস হচ্ছে। মৌনোতা বারান্দায় এক মনে আকাশ দেখছে। ওর পরনে শুধু গায়ে হলুদ এর শাড়ি গয়না সব খুলে ফেলেছে। চুল গুলা অবাধ্য হয়ে উড়ছে। কেনো সে পালয়ে যাচ্ছে না। কেনো সবাই কে কিছু বলছে না। এত জড়তা কাজ করছে কেনো।
‘ভাবি ঘুম আসবে না’?
‘অনন্যার কথা ধ্যান ভাঙে মৌনোতার। মুচকি হেসে বলে
‘হুম। আসো বসো’।
‘কি ভাবছো’?
‘না কিছু না।
‘ভাবি আম্মু তারাতাড়ি শুয়ে পরতে বলেছে’।
আরিয়া এসে মৌনোতারকে বলে।
‘হুম শুবো।
আসো আসো তারাতাড়ি আস। আর সময় নষ্ট করো না।
চলবে…
®তোয়ামনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here